২০২৫ সালে সফল হতে চাইলে যেগুলো জানতেই হবে
আপনি কি ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেন বা ইনস্টাগ্রামে পণ্যের প্রচার করেন? তাহলে আপনার জন্য এই লেখাটা খুবই দরকারি।
একসময় Boost দিলে কিছু লাইক-পেইজে ভিজিট আসতো। কিন্তু এখনকার মেটা (Meta = Facebook + Instagram) অ্যাড সিস্টেম অনেক বেশি বুদ্ধিমান হয়ে গেছে।
২০২৫ সালের দিকে যেভাবে মেটা প্ল্যাটফর্ম কাজ করবে, তাতে পুরনো পদ্ধতিগুলো অনেকটাই অকার্যকর হয়ে যাবে। তাই চলুন, সহজভাবে জেনে নিই কীভাবে মেটা অ্যাড চালিয়ে সফল হওয়া যাবে।
১. Creative-ই এখন আসল Targeting
আগে আমরা ফেসবুকে ad চালানোর সময় নির্দিষ্ট লোকদের টার্গেট করতাম—যেমন:
- বয়স ১৮-৩৫
- ঢাকার মধ্যে বসবাস করে
- “ফ্যাশন” বা “টেকনোলজি” ইন্টারেস্ট আছে
❌ এখন এসব অনেকটাই পুরনো হয়ে গেছে।
✅ এখন মেটা নিজের অ্যালগরিদম দিয়ে বুঝে ফেলে কে কী চায়। আর সেটা বোঝার প্রধান উপায় হলো: আপনার ad-এর Creative (ছবি, ভিডিও, টেক্সট) কেমন।
🎯 সহজ উদাহরণ:
আপনি যদি কুর্তা বিক্রি করেন, এবং একটা সুন্দর ভিডিও বানান যেখানে একজন ছেলে কুর্তা পরে বসে আছে মেলায়, হাসছে, বন্ধুদের সঙ্গে সেলফি তুলছে এটা দেখে মেটা নিজে থেকেই ঠিক করে ফেলবে কার কাছে এই অ্যাড দেখানো উচিত।
📌 অর্থাৎ, আপনার Creative যদি ভালো হয়, মেটা নিজেই আপনার জন্য সঠিক মানুষ খুঁজে বের করবে।
২. Attribution বুঝলে টাকা বাঁচবে
আপনি অনেক টাকা খরচ করলেন, কিন্তু অ্যাডে কতজন কাস্টমার এলো, সেটা যদি ঠিকমতো না বোঝেন তাহলে তো সব অর্থ পানিতে!
⚠️ Meta Ads Manager-এ দেখানো রেজাল্ট আসলে নির্ভর করে আপনি কোন Attribution Setting বেছে নিয়েছেন তার উপর।
🔍 যা বুঝতে হবে:
- “1-day click” মানে কেউ আপনার অ্যাড ক্লিক করার ১ দিনের মধ্যে কিনলে সেটা কনভার্সন ধরা হবে
- “7-day click” মানে ৭ দিনের মধ্যে কিনলেও সেটা অ্যাডের ফলাফল ধরা হবে
🧠 সহজ উদাহরণ:
ধরুন, আপনার পণ্য দামি জুতার দাম ৪০০০ টাকা। কেউ অ্যাড দেখে সঙ্গে সঙ্গে কেনে না। ভাবনা করে ৩ দিন পর কেনে।
এমন ক্ষেত্রে যদি আপনি ১-day attribution রাখেন, মেটা দেখাবে যে কেউ কিছু কেনেনি। অথচ ৭-day attribution রাখলে বুঝবেন, কিনেছে!
৩. Pixel নয়, এখন API-র যুগ
Meta Pixel আগে ওয়েবসাইটে ভিজিট করা মানুষদের ট্র্যাক করত। কিন্তু এখন অনেক ব্রাউজার privacy বাড়িয়েছে যার কারণে Pixel ঠিকভাবে কাজ করে না।
✅ এখন অনেক কোম্পানি Conversions API (CAPI) ব্যবহার করে। এটা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে কে কোথা থেকে এসেছে, কী করেছে।
🧰 সহজ টুলস:
- Google Tag Manager (GTM) দিয়ে server-side tracking
- Stape.io দিয়ে API gateway
- Meta Signals Gateway (Meta নিজেই দিচ্ছে)
📌 আপনি যদি নিজের ওয়েবসাইটে এগুলো ইন্টিগ্রেট করতে পারেন, তাহলে আপনার ad performance অনেক ভালো হবে।
৪. Click-to-Message Ads হচ্ছে নতুন ট্রেন্ড
আজকাল মানুষ মোবাইলেই সব কিছু জানতে চায়। তাই ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্ম পূরণ করার ঝামেলা পছন্দ করে না।
✅ এখন সবচেয়ে ভালো কাজ করে WhatsApp, Messenger, বা Instagram DM-এ Click-to-Message Ads।
🎯 উদাহরণ:
আপনার যদি অনলাইন কেকের দোকান থাকে, আপনি যদি অ্যাডে বলেন “মেসেজ দিন, আজকের স্পেশাল ডিসকাউন্ট জানতে” তাহলে অনেকেই ইনবক্সে মেসেজ দেবে। সেখান থেকেই বিক্রি সহজ।
📌 কম সময়, সরাসরি কথা তাতেই কনভার্সন বেড়ে যাবে।
📁 ৫. First-Party Data = আপনার নিজস্ব সম্পদ
Google বা Facebook আপনার জন্য data রাখবে না। আপনাকেই নিজের লিড, কাস্টমার ইনফো জমা রাখতে হবে।
✅ যার কাছে যত ভালো data থাকবে, তার অ্যাড তত effective হবে।
📦 যা করা উচিত:
- যেসব মানুষ আপনার প্রোডাক্ট কিনেছে, তাদের নাম, ফোন, ইমেইল জমা রাখুন
- কোন লিড সেলসে পরিণত হলো, কোন লিড হয়নি এই তথ্য Meta-কে দিন
- CRM বা Google Sheet দিয়েই শুরু করতে পারেন
📌 এতে করে Meta বুঝবে আপনার আদর্শ কাস্টমার কারা। পরেরবার ad চালালে সেরকম মানুষদের কাছেই অ্যাড যাবে।
🤝 ৬. Creator দের সঙ্গে কাজ করলেই বাড়বে বিশ্বাসযোগ্যতা
মানুষ এখন ব্র্যান্ডের কথা নয়, মানুষ থেকে মানুষ কী বলছে সেটা বেশি বিশ্বাস করে।
✅ তাই ইউজার-জেনারেটেড কনটেন্ট (UGC) বা ইনফ্লুয়েন্সারদের দিয়ে ad বানানো হচ্ছে নতুন ট্রেন্ড।
🎥 উদাহরণ:
একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর যদি বলেন “এই হেয়ার অয়েল আমি ৩ মাস ধরে ব্যবহার করছি, চুলে অনেক পার্থক্য বুঝতে পারছি” তাহলে তা এক্সপার্ট অ্যাড থেকেও বেশি কাজ করে।
📌 এমন কন্টেন্ট relatable হয়, এবং ফলাফলও ভালো হয়।
Meta ad এখন শুধু বাজেট দিয়ে চালালেই হবে না।
আপনাকে জানতে হবে Creative, Attribution, Tracking, Messaging, Data, এবং Human connection এই সব বিষয় ঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।
✅ আপনি যদি সঠিকভাবে এই ৬টি বিষয় মাথায় রেখে ad চালান, তবে ২০২৫ সালে শুধু টিকে থাকাই নয়, বরং লিড ও বিক্রি দুটোই বেড়ে যাবে।